হাওজা নিউজ এজেন্সির প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাশ্মীর উপত্যকার পর্যটন কেন্দ্র পহেলগামের বাইসরন এলাকায় সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন মাওলানা ওয়াসিম রেজা কাশ্মীরি। তিনি এই হামলায় জড়িতদের মানবতার শত্রু হিসেবে অভিহিত করেছেন এবং বলেছেন এটি বর্বরতার চরম উদাহরণ। নিরস্ত্র মানুষের রক্ত ঝরানো কোনো সাহসিকতা নয়, বরং কাপুরুষতার পরিচয়। তিনি এটিকে বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অংশ বলেও সন্দেহ প্রকাশ করেন যার উদ্দেশ্য কাশ্মীরি জনসাধারণকে বদনাম করা।
জামিয়া আল-মুস্তাফা (সা.), ক্বুমে অধ্যয়নরত কাশ্মীরি ধর্মপ্রচারক ও গবেষক মাওলানা ওয়াসিম রেজা বাইসরনে বহিরাগত পর্যটকদের উপর বর্বর হামলায় গভীর দুঃখ ও শোক প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, পবিত্র কোরআনের বাণী অনুসারে, যে একজন নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করে, সে যেন পুরো মানবজাতিকে হত্যা করল; আর যে কাউকে জীবন দান করে, সে যেন পুরো মানবজাতিকে জীবন দান করল।
মাওলানা বলেন, সন্ত্রাসীদের কোনো ধর্ম বা পরিচয় নেই বা হয়না এবং ইসলাম সম্পূর্ণভাবে শান্তি ও সম্প্রীতির ধর্ম। দুর্ভাগ্যবশত, উপনিবেশবাদ এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের নেতিবাচক প্রচারে মুসলমানদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমাদের গর্বের বিষয় যে, ভারত একটি মহান দেশ যার সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য ও শক্তি হল এর বৈচিত্র্য ও সাম্প্রদায়িক ঐক্য — যেখানে বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীরা সাংস্কৃতিক সহনশীলতার সঙ্গে একসঙ্গে বসবাস করছে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, কিছু বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ শক্তি এই ঐক্য ও সম্প্রীতির সংস্কৃতি দুর্বল করতে ষড়যন্ত্র করছে। এই মূল্যবান ঐতিহ্যকে সংরক্ষণ করা অত্যন্ত জরুরি।
পহেলগাম ঘটনাটি কাশ্মীরিদের হৃদয়ে গভীর দুঃখের সৃষ্টি করেছে এবং আমাদের অস্তিত্বকে নাড়িয়ে দিয়েছে। একইসাথে, মিডিয়ার নেতিবাচক প্রতিবেদন এবং অন্যান্য রাজ্যে কাশ্মীরিদের হয়রানি দুঃখজনক, অগ্রহণযোগ্য এবং প্রত্যাশার পরিপন্থী। কাশ্মীরি জাতি ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে আছে এবং তাদের দুঃখে সমানভাবে শরিক।
মাওলানা ওয়াসিম রেজা কাশ্মীরি সরকার ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যে, এমন নৃশংস হামলা ঠেকাতে অবিলম্বে ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হোক এবং শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ কাশ্মীর গড়তে জনগণের আস্থা অর্জন করা হোক।
তিনি অন্যান্য রাজ্যে বসবাসকারী কাশ্মীরি বিশেষ করে ছাত্রদের হয়রানির ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার উপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
আপনার কমেন্ট